
"শিবঃ শিবঃ শিবশ্চৈব নান্যদস্তীহ কিঞ্চন";
শ্রীশিবমহাপুরাণের জ্ঞানসংহিতায় বলা হয়েছে, শিবই সমস্ত, সমস্তই শিব।পরমশিবের যে সত্ত্বা প্রলয় ও জীবগণের বিনাশ করে, সেই সত্ত্বাকেই ত মহাকাল বলে। পরমশিবের এই সত্ত্বা উগ্র ও দুর্ধর্ষ। সময়রূপী রজ্জু দিয়ে এই উগ্রসত্ত্বা ব্রহ্মাণ্ডরূপী ঋষভকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরব পাণ্ডব উভয়পক্ষে যারা নিহত হয়েছিলেন তাঁরা সকলেই মহাকালের করালগ্রাসে পতিত হয়েছিলেন। জগতের সকল জীবই মহাকালের হাতের কাঠের পুতুল। মহাকালরূপী শিব এক বিরাট শিশু হয়ে আনমনে এ জগতের সাথে খেলে যাচ্ছেন। তিনিই জগতের জ্ঞাতা, তিনিই জগতের একমাত্র জ্ঞান এবং তিনিই জগতের একমাত্র জ্ঞেয় বস্তু। ব্রহ্মাদি থেকে সামান্যতম একটি তৃণলতা পর্যন্ত এ দৃশ্যমান জগতে আমরা যা দেখি তা সকলই শিবস্বরূপ। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রূপে শিবই এ জগতে প্রবিষ্ট। এ বিষয় নিয়ে কোন সংশয়ে কিছুই নেই। শিবের ইচ্ছাতেই সমুদ্রের বুদবুদের মত জগতের উৎপত্তি ঘটে, আবার ইচ্ছাতেই জগত লীন হয়। এভাবেই সৃষ্টি, লয় এবং পুনরায় বিসৃষ্টির আবর্তনে আবর্তিত হচ্ছে সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। তিনি চিন্তার অতীত একটি সত্ত্বা। সম্পূর্ণভাবে তাঁকে দেবতা-ঋষি-মুনিও জানতে পারেন না। তিনি জগতের সর্বত্র অনুপ্রবিষ্ট হয়ে থাকায় তিনি সকলকে জানেন, কিন্তু জগতের কেউ তাঁকে পরিপূর্ণভাবে কখনও জানতে পারে না।
জ্ঞাতা জ্ঞানং তথা জ্ঞেয়ং সর্বং শিবমিদং জগৎ
ব্রহ্মাদিতৃণপর্য্যন্তং যৎ কিঞ্চিদৃশ্যতে জগৎ।
এতৎ সর্বং স এবাস্তি নাত্র কার্য্যা বিচারণা।
যদেচ্ছা তস্য জায়েত তদা চ ক্রিয়তে ত্বিদম্।
সর্বং স এব জানাতি তং জানাতি ন কশ্চন।।
(শিবমহাপুরাণ: জ্ঞানসংহিতা, ৭৮.৩)
"জ্ঞাতা, জ্ঞান এবং জ্ঞেয়; এই ত্রিবিধ ভাবাপন্ন এই সমস্ত জগৎই শিবস্বরূপ। ব্রহ্মাদি তৃণপর্য্যন্ত যে কিছু জগৎ দৃশ্যমান , সে সমস্তই শিবস্বরূপ, এতে কোন বিচার করবে না। ভগবান শিবের ইচ্ছাতেই জগতের উৎপত্তি। তিনি সকলকে জানেন, কিন্তু তাঁকে পরিপূর্ণ জানতে পারে না।"
ভগবান শিব অচিন্ত্য। এরপরেও আমরা সাধন জগতে অগ্রসর হতে তাঁর রূপ কল্পনা করি। কখনই সৃষ্টি, স্থিতির সৌম্যরূপ অথবা কখনো প্রলয়ের ভয়ংকর রুদ্ররূপ। তাঁর কোন স্থায়ী সুনির্দিষ্ট রূপ নেই। রূপ আছে আমাদের মানসলোকে। কারণ ধরে সাধন জগতে অগ্রসর হওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য।শাস্ত্রের বিভিন্ন স্থানেই অচিন্ত্য শিবের ধ্যানমন্ত্র রয়েছে। যাতে আমরা মনকে সেই রূপে নিবিষ্ট এবং একাগ্র করতে পারি। ধ্যানমন্ত্রের বর্ণনানুসারে ভগবান শিবের যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা হল-তাঁর গায়ের বর্ণ শুভ্র, অমৃতের প্রতীক অর্দ্ধচন্দ্র ভূষণরূপে তিনি তাঁর জটায় ধারণ করে আছেন, করিয়াছেন, যিনি রত্নময় বেশভূষায় উজ্জ্বল, অর্দ্ধ নির্মিলিত চোখে একাগ্রভাবে যিনি পদ্মাসনে উপবিষ্ট, যিনি বাঘের চামড়ার উপরে উপবিষ্ট, ত্রিনেত্র, পঞ্চবদন, হাতে ত্রিশুল, গায়ে শ্মশানের ভস্ম, কুলকুণ্ডলিনী শক্তির প্রতীক নাগ জড়িয়ে আছে সর্বাঙ্গে।
ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতংসং
রত্নাকল্লোজ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নম্ ।
পদ্মাসীনং সমস্তাৎ স্ততমমরগণৈর্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং
বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চবক্ত্রং ত্রিনেত্রম্।।
"রজতগিরির ন্যায় তাঁহার আভা, যিনি সুন্দর চন্দ্রকে ভূষণরূপে ধারণ করিয়াছেন, যাঁহার দেহ রত্নময় বেশভূষায় উজ্জ্বল, যিনি পদ্মাসনে উপবিষ্ট, আনন্দময় মূর্তি, চতুর্দিকে দেবতারা তাঁহার স্তব করিতেছেন, যিনি ব্যাঘ্রচর্ম- পরিহিত, যিনি জগতের আদি, জগতের কারণ, সকল প্রকার ভয় নাশক, পঞ্চবদন এবং প্রতিটি বদনে তিনটি চক্ষু, সেই মহেশকে নিত্য ধ্যান করি।"
শিবই গাছ, পাথর, পাহাড় সহ জগতের সকল স্থাবর মাঝে উপাদান কারণ রূপে বিরাজমান। আবার তিনিই মানুষ, পশুপাখি সহ সকল জঙ্গমাদির মধ্যেও অবস্থিত। অর্থাৎ জগতের স্থাবরজঙ্গমাদি সকল কিছুর মাঝেই পরমেশ্বর শিব। জগতের সমস্ত জীবের মাঝেই শিব। তাই শিব ভিন্ন আর কিছুই এ জগতে নেই। তিনিই বিভিন্ন নামে বিভিন্ন রূপে প্রকাশিত। আমরা না বুঝে বিভ্রান্ত হয়ে তাঁকে বহু মনে করি। তিনি এক এবং অদ্বিতীয়, তিনি বহু নন। আমরা শুধুই মনের কলুশতায় তাঁকে বহু বলে ভ্রম করি। জগতের সমুদ্র এক হলেও ফেন-তরঙ্গাদিরূপ উপাধি এবং ভৌগোলিক অবস্থান ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নামে আমরা আমাদের নিজেদের সুবিধার্থে সংজ্ঞায়িত করি। তেমনি পরমাত্মাও জীবের অহঙ্কারাদিরূপ উপাধিকে আশ্রয় করে অধিকারী ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নামে এবং রূপে প্রকাশিত হন। গাছে অঙ্কুরিত হওয়ার পূর্বে কেবল বীজরূপে থাকে। পরবর্তীতে মাটি ও জল এই উভয়ের সার্থক যোগ হলে বীজ হতে অঙ্কুরে উদগম ঘটে। তেমনি সৃষ্টির পূর্বে ও অন্তে কেবলমাত্র পরমাত্মাই অবস্থান করেন। বিষয়টি ঋগ্বেদ সহ বেদের একাধিক স্থানেই আছে।
নাসদাসীন্নো সদাসীত্তদানীং
নাসীদ্রজো নাে ব্যোমা পরাে যৎ।
কিমাবরীবঃ কুহু কস্য শমন্নম্ভঃ
কিমাসীদগহনং গভীরম॥
ন মৃত্যুরাসীদম মৃতং ন তর্হি
ন রাত্র্যা অহ্ন আসীৎ প্রকেতঃ।
আনীদবাতং স্বধয়া তদেকং
তস্মাদ্ধানান্ন পরঃ কিং চনাস ॥
তম আসীত্তমসা গূড়হমগ্রেঽ-
প্রকেতং সলিলং সর্বমা ইদম্।
তুচ্ছ্যেনাভ্বপিহিতং যদাসীত্ত-
পসস্তন্মহিনাজায়তৈকম্।
(ঋগ্বেদ সংহিতা: ১০.১২৯.১-৩)
"সেকালে যা নেই তাও ছিল না, যা আছে তাও ছিল না। পৃথিবী ছিল না, অতি দূরবিস্তৃত আকাশও ছিল না। আবরণ করে এমন কি ছিল? কোথায় কার স্থান ছিল? দুর্গম ও গম্ভীর জল কি তখন ছিল?
তখন মত্যুও ছিল না, অমরত্বও ছিল না, রাত্রি ও দিনের প্রভেদ ছিল না। কেবল তিনিই একমাত্র বায়র সহকারিতা ব্যতিরেকে আত্মা মাত্র অবলম্বনে নিশ্বাস-প্রশ্বাসযুক্ত হয়ে অবস্থিত ছিলেন। তিনি ব্যতীত তার কিছুই ছিল না
সর্বপ্রথম অন্ধকার দ্বারা আবৃত ছিল। সমস্তই চিহ্নবর্জিত ও চতুর্দিক জলময় ছিল। অবিদ্যমান বস্তু দ্বারা সে সর্বব্যাপী আচ্ছন্ন ছিলেন। তপস্যার প্রভাবে সে এক বস্তুর জন্ম নিলেন।"
জীবের প্রকৃত জ্ঞান জন্মিলে সমস্তই ব্রহ্মস্বরূপ বা শিবস্বরূপ বোধ হয়। তখন সাধক উপলব্ধি করে আমি শিব এবং আমিই ব্রহ্ম। বিষয়টি বেদান্তের চারটি মহাবাক্যে এবং শ্রীশঙ্করাচার্যের একাধিক স্তোত্রে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। জীবের অজ্ঞান অবস্থায়তে বহুরূপ-সম্পন্ন জগতের প্রত্যক্ষ হয়। কিন্তু সাধনার ফলে বহু বিলুপ্ত হয়ে এক অদ্বৈতের সম্যক জ্ঞান লাভ হয়। চন্দ্র ও সূর্য্য প্রকাশ দ্বারা সর্ব্বব্যাপক, কিন্তু তাহাদিগের জগতের সহিত কোন স্পর্শসম্বন্ধ নাই; সেইরূপ পরমাত্মা সর্ব্বব্যাপক হইলেও সমস্ত জগৎ মিথ্যা, এইজন্য তাঁহার কিছুতেই সম্বন্ধ নাই। যে জীবের 'আমি কর্ত্তা' এইরূপ অভিমান না থাকে, সেই জীব স্বীয় জ্ঞান দ্বারা অভিমান ত্যাগ করত সাক্ষাৎ শিবস্বরূপ হতে পারেন পারেন। সোনা যখন খাদের সাথে মিশ্রিত হয়, তখন সেই সোনার অল্পমূল্য হয়। জীবও তেমনি অহংকারযুক্ত হয়ে গেলে সংসারে বদ্ধ হয়।তখন তার আর মুক্তি প্রচেষ্টা থাকে না। তবে খাদযুক্ত সোনাকে যেমন পুনরায় আগুনে দগ্ধ করলে সকল খাদ চলে গিয়ে সোনা পরিশুদ্ধ হয় তখন পূর্বের ন্যায় আবার মূল্যবান হয়। তেমনি সংসারে বদ্ধ জীব যখন আবার কঠিন সাধনায় ফলে সাধনার পথে অন্তরায়কে দূরীভূত করে, তখন সে আবার শুদ্ধ হয়। সে বুঝতে পারে যে, আমি নিষ্পাপ, অপাপবিদ্ধ ব্রহ্ম থেকে এসেছি, ঠিক একইভাবে নিষ্পাপ অপাপবিদ্ধ হয়েই ব্রহ্মের সাথে যুক্ত হতে হবে।
শিবঃ শিবঃ শিবশ্চৈব নান্যদস্তীহ কিঞ্চন।
নানাভাতিস্বরূপো হি ভাসতে শঙ্করঃ সদা।।
যথা সমুদ্রো মৃচ্চৈব সুবর্ণমথবা পুনঃ।
উপাধিতো হি নানাত্বং লভেত চ তথৈব চ।।
কার্য্য-কারণয়োর্ভেদো বস্তুতো ন প্রবর্ততে।
যথা বীজাৎ প্ররোহশ্চ নানাবিধঃ প্রকাশতে।।
অন্তে চ বীজমেব স্যান্নাত্র কার্য্যা বিচারণা।
জ্ঞানে বীজং প্রদৃশ্যেত হ্যজ্ঞানে বিবিধং জগৎ।।
সর্ব্বং শিবঃ শিবঃ সর্বত্রং নাত্র ভেদোঽস্তি কশ্চন।
কথঞ্চ বিবিধং পশ্যেদেকত্বং ন কথং পুনঃ।।
যথৈকং চন্দ্রসূর্য্যাখ্যং জ্যোতির্নানাবিধং পুমান।
জলাদৌ চ বিশেষণ দৃশ্যতে চ তথৈব সঃ।।
সর্বত্র ব্যাপকং সো বৈ স্পর্শত্বেন নিবধ্যতে।
তথৈব ব্যাপকো দেবো ন বধ্নাতি পুনঃ ক্বচিৎ।।
অহঙ্কারতয়া জীবস্তন্মুক্তঃ শঙ্করঃ স্বয়ম্।
যথৈকঞ্চ সুবর্ণং হি তাম্রেণ মিলিতং যদা।।
অল্পমূল্যং প্রজায়েত তথা জীবো হ্যহং পুনঃ।
তদেব চ সুবর্ণং হি ক্ষারাদিশোধিতং যদা।।
পূর্ববন্মূল্যতাং যাতি তথা জীবস্য সম্মতাম্।
(শিবমহাপুরাণ: জ্ঞানসংহিতা, ৭৮.১৩-২২)
"স্থাবর জঙ্গম প্রভৃতি সকলই শিবস্বরূপ সমস্তই শিব; শিবই সমস্ত। এই জগতে শিব ভিন্ন আর অন্য কিছুই নাই। শঙ্কর শিবই নানারূপে এবং স্বরূপে প্রকাশ পান। যেমন সমুদ্র এক হইয়াও ফেন-তরঙ্গাদিরূপ উপাধিভেদে ভিন্ন ভিন্ন; মৃত্তিকা ঘট শরাব প্রভৃতি উপাধিভেদে ভিন্ন ভিন্ন; তেমনই পরমাত্মাও অহঙ্কারাদিরূপ উপাধিভেদে ভিন্ন ভিন্নরূপে প্রকাশ পান। কার্য্য ও কারণের বাস্তবিক ভেদ নাই। যেমন অঙ্কুর হইবার পূর্বে কেবল বীজমাত্র থাকে, তাহার পর মৃত্তিকা ও জল এই উভয়ের যোগ হইলে ঐ বীজ হইতে বিবিধ অঙ্কুর প্ররোহাদি উৎপন্ন হয় এবং পরিপাক দশাতে ফলের অভ্যন্তরে বীজমাত্র থাকে আর সমস্ত নষ্ট হয়, সেইরূপ সৃষ্টির পূর্ব্বে ও অন্তে কেবলমাত্র পরমাত্মাই অবস্থান করেন, এ সম্বন্ধে কোন বিকল্প নাই। জীবের প্রকৃত জ্ঞান জন্মিলে সমস্তই ব্রহ্মস্বরূপ বোধ হয়; অজ্ঞান অবস্থায় থাকিলে, বহুরূপ-সম্পন্ন জগতের প্রত্যক্ষ হয়। এই জগতে সমস্তই শিব; শিবই সমস্ত,শিব ভিন্ন আর অন্য কিছুই নাই। অজ্ঞানব্যক্তি, নানাপ্রকারই অবলোকন করে, কখনই অভিন্নরূপ অবলোকন করে না। যেরূপ মনুষ্য চক্ষুর দোষে এক জ্যোতির্ম্ময় চন্দ্র এবং সূর্য্যকে জলাদিতে বিশেষরূপে ভিন্ন ভিন্ন অবলোকন করে, তেমনই জীব মায়ার অধীন হইয়া পরমাত্মাকে ভিন্ন বলিয়া জ্ঞান করে। চন্দ্র ও সূর্য্য প্রকাশ দ্বারা সর্ব্বব্যাপক, কিন্তু তাহাদিগের জগতের সহিত কোন স্পর্শসম্বন্ধ নাই; সেইরূপ পরমাত্মা সর্ব্বব্যাপক হইলেও সমস্ত জগৎ মিথ্যা, এইজন্য তাঁহার কিছুতেই সম্বন্ধ নাই। যে জীবের 'আমি কর্ত্তা' এইরূপ অভিমান না থাকে, সেই জীব স্বীয় জ্ঞান দ্বারা অভিমান ত্যাগ করত সাক্ষাৎ শিবস্বরূপ হন। যেমন এক সুবর্ণ তামাদির সাথে মিশ্রিত হয়, তখন সেই সুবর্ণের অল্পমূল্য হয়, সেইপ্রকার জীব অহংকারযুক্ত হলে বদ্ধ হয়।পুনর্বার ঐ সুবর্ণ যে কালে আগুনে দগ্ধ হয়ে পরিশুদ্ধ হয়, তখন পূর্বের ন্যায় আবার মূল্যবান হয়।"
শিবই নিরাকার ওঙ্কাররূপে বিরাজিত; তিনিই এ জগত সৃষ্টি করে এ জগতের মধ্যে বিরাজিত; তিনিই ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর নামে সৃষ্টি পালন ও লয় করেন; তিনিই শাক্ত,শৈব, বৈষ্ণবাদি পঞ্চমতে আরাধিত; তিনিই চন্দ্র, সূর্য এবং অগ্নি; তিনিই ওঙ্কারের অ, উ, ম্ -এ তিন অক্ষর।
একাক্ষরায় রুদ্রায় ওঙ্কারাতাত্মরূপিণে ।
ওকারায়াদিদেবায় বিশ্বদেবায় বৈ নমঃ ।।
তৃতীয়ায় মকারায় শিবায় পরমাত্মনে ।
সূর্য্যাগ্নিসোমবর্নায় যজমানায় বৈ নমঃ ।।
অগ্নৈয় রুদ্ররুপায় রুদ্রাণা পতয়ে নমঃ ।
( লিঙ্গ পুরাণ:পূর্বভাগ,১৮.১-৩ )
"বিষ্ণু বললেন হে রুদ্র ! একাক্ষররূপী তোমাকে নমস্কার ; হে আত্মরূপিন্ ! অকাররূপী তোমাকে নমস্কার । হে আদিদেব , বিশ্বদেব উকাররূপী তোমাকে নমস্কার । হে শিব! তুমি পরমাত্মা ও মকার ; তুমি সূর্য তুমি সোমবর্ণ ; তুমি যজমান । হে রুদ্র ! তুমি অগ্নি ও রুদ্রাধিপতি তোমাকে নমস্কার।"
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।