সনাতন ধর্মে দুইজন অবতার পুরুষকে পুরুষোত্তম নামে অবিহিত করা হয়। এর একজনের নাম মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্র এবং অন্যজনের নাম লীলা পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীরামচন্দ্র ত্রেতাযুগে আবির্ভূত হয়েছেন এবং শ্রীকৃষ্ণ দ্বাপরযুগের শেষে আবির্ভূত হয়েছেন। সমাজ, সংসার, পরিবার, রাষ্ট্র সহ মানব জীবনের এমন কোন বিষয় নেই যা এই দুই অবতারের জীবনে দেখা যায়না। তাই তাঁরা আজও মানব সভ্যতার আদর্শিক ব্যক্তিত্ব। শ্রীরামচন্দ্র সর্বদাই প্রশান্ত চিত্ত ও মৃদুভাষী। কেউ কঠোর নিষ্ঠুর বাক্য ব্যবহার করলেও এর প্রতিবাক্যে কখনো কঠোর বাক্য ব্যবহার করতেন না। কেউ কখনো সামান্যতম উপকার করলে তিনি তার প্রতি চিরকাল সন্তুষ্ট থাকেন। অপরপক্ষে ঔদার্য বশত কারও শত অপকারও মনে রাখেন না।সেই রামচন্দ্র কিন্তু সৎ শিক্ষা লাভের জন্য প্রতিদিন অস্ত্র শিক্ষার অবসরে সাধুস্বভাব, জ্ঞানী ও বয়োঃবৃদ্ধ সজ্জনদের সঙ্গে সর্বদা সদালাপে রত থাকতেন।তিনি ছিলেন বুদ্ধিমান ও মিষ্টি ভাষী। আগত সকলের সঙ্গে পূর্বেই মধুর বাক্যে আলাপ করতেন। বীর্যবান হয়েও তিনি নিজের বীরত্বের জন্য গর্বিত ছিলেন না।তিনি কদাচ অসত্যভাষী ছিলেন না, বিদ্বান এবং বয়স্কদের সম্মান করতেন। প্রজারা তাঁর অনুরাগী এবং তিনিও প্রজানুরঞ্জক ছিলেন।শ্রীরামচন্দ্র সর্বদাই পরম দয়াবান, ক্রোধজয়ী, ব্রাহ্মণদের প্রতি শ্রদ্ধাবান, দরিদ্রদের প্রতি অনুকম্পাপরায়ন, ধর্মরহস্য সম্বন্ধে অভিজ্ঞ, ইন্দ্রিয় জয়ী ও পবিত্র ছিলেন।স্বীয় বংশানুরূপ বুদ্ধিসম্পন্ন রাম নিজের ক্ষাত্রধর্মকে অত্যন্ত সম্মান করতেন। মনে করতেন, তার থেকেই অর্থাৎ স্বধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই পরমানন্দে মহৎ স্বর্গফল প্রাপ্তি হবে।শ্রীরামচন্দ্র অকল্যাণকর কর্মে রত হতেন না, শাস্ত্রবিরুদ্ধ কথায় তাঁর প্রবৃত্তি হত না। বৃহস্পতির মতো তিনি পরপর যুক্তি সাজিয়ে কথা বলতেন।নীরোগ, আকর্ষণীয় দেহসৌষ্ঠব বিশিষ্ট তরুণ, সুবক্তা এবং স্থান-কাল বিবেচনাপূর্বক কর্মক্ষম শ্রীরামচন্দ্রই যেন জগতে মানব চরিত্রের সারতত্ত্ববেত্তা এক মাত্র ব্যক্তিরূপে সৃষ্ট হয়েছেন। রামচন্দ্র সকল বিদ্যায় দক্ষ।ষড়ঙ্গ বেদবিদ্যায় যথাযথ অভিজ্ঞ এবং ধনুর্বিদ্যায় পিতা দশরথ অপেক্ষা দক্ষ।শ্রীরামচন্দ্র ছিলেন জগতে কল্যাণের আকর, সৎস্বভাব, দীনতারহিত সত্যবাদী, সরল স্বভাবের এবং ধর্মশাস্ত্রেও অর্থশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ব্রাহ্মণগণ কর্তৃক সুশিক্ষিত।সময় বিশেষে তিনি নির্জনে নিভৃতে থাকতেন, রাজ্যশাসনের মন্ত্রগুপ্তি রক্ষা করতেন। তার গুণগ্রাহী সাহায্যকারী বন্ধুর অভাব ছিল না। ক্রোধ এবং আনন্দের তিনি যথোচিত ব্যবহার করতেন। ত্যাগ ও সংযমের তিনি ছিলেন অতুলনীয়। গুরুজনে প্রগাঢ় ভক্তি পরায়ণ এবং প্রজ্ঞাবান। তিনি অসৎপথে আহৃত বা অসৎ ব্যক্তি প্রদত্ত বস্তু গ্রহণ করতেন না। কখনই কারও প্রতি দুর্বাক্য ব্যবহার করতেন না। তিনি ছিলেন অনলস ও প্রমাদহীন এবং নিজদোষ ও পরদোষ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অবহিত।রামচন্দ্র ছিলেন শাস্ত্রজ্ঞানী, উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ এবং সকল মানুষের মনের ভাব বুঝতে সমর্থ। শাস্তি ও আনুকূল্য দানে অভিজ্ঞ ন্যায় বিচারক।
স হি রূপোপপন্নশ্চ বীর্যবাননসূয়কঃ।
ভূমাবনুপমঃ সূনুর্গুণৈর্দশরথোপমঃ৷৷
"শ্রীরামচন্দ্র ছিলেন রূপবান, পরাক্রমী, অদোষদর্শী, জগতে সর্ববিষয়ে অতুলনীয় এবং পিতার তুল্য গুণসম্পন্ন, দশরথের উপযুক্ত পুত্র।"
সচ নিত্যং প্রশান্তাত্মা মৃদুপূর্বং চ ভাষতে৷
উচ্যমানোঽপি পরুষং নোত্তরং প্রতিপদ্যতে৷৷
তিনি সর্বদাই প্রশান্তচিত্ত ও মৃদুভাষী ; কঠোর বাক্য কথিত হলেও (কেউ তাঁকে কঠোর কথা বললেও) তিনি থাকেন নিরুত্তর (প্রতিবাদহীন)।
কদাচিদুপকারেণ কৃতেনৈকেন তুষ্যতি ।
ন স্মরত্যপকারাণাং শতমপ্যাত্মবত্তয়া।।
"কেউ কখনও একবারমাত্র উপকার করলে তিনি তার প্রতি চিরকাল সন্তুষ্ট থাকেন ; অপরপক্ষে ঔদার্যবশত কারও শত অপকারও মনে রাখেন না।"
শীলবৃদ্ধৈর্জ্ঞানবৃদ্ধৈবর্যয়োবৃদ্ধৈশ্চ সজ্জনৈঃ।
কথয়ন্নাস্ত বৈ নিত্যমস্ত্রয়োগ্যান্তরেম্বপি৷৷
"সেই রামচন্দ্র কিন্তু সৎশিক্ষালাভের জন্য প্রতিদিন অস্ত্রশিক্ষার অবসরে সাধুস্বভাব, জ্ঞানী ও বয়ঃবৃদ্ধ সজ্জনদের সঙ্গে সর্বদা সদালাপে রত থাকতেন।"
বুদ্ধিমান্ মধুরাভাষী পূর্বভাষী প্রিয়ংবদঃ।
বীর্যবান্ন চ বীর্যেণ মহতা স্বেন বিস্মিতঃ৷৷
"তিনি ছিলেন বুদ্ধিমান ও মিষ্টভাষী ; আগত সকলের সঙ্গে পূর্বেই মধুর বাক্যে আলাপ করতেন। বীর্যবান হয়েও তিনি নিজের বীরত্বের জন্য গর্বিত ছিলেন না।"
ন চানৃতকথো বিদ্বান্ বৃদ্ধানাং প্রতিপূজকঃ।
অনুরক্তঃ প্রজাভিশ্চ প্রজাশ্চাপ্যনুরজ্যতে৷৷
"তিনি কদাচ অসত্যভাষী ছিলেন না; বিদ্বান এবং বয়ঃবৃদ্ধদের সম্মান করতেন। প্রজারা তাঁর অনুরাগী এবং তিনিও প্রজানুরঞ্জক ছিলেন।"
সানুক্রোশো জিতক্রোধো ব্রাহ্মণপ্রতিপূজকঃ।
দীনানুকম্পী ধর্মজ্ঞো নিত্যং প্রগ্রহবাঞ্ছুচিঃ৷৷
"শ্রীরামচন্দ্র সর্বদাই পরম দয়াবান, ক্রোধজয়ী, ব্রাহ্মণদের প্রতি শ্রদ্ধাবান, দরিদ্রদের প্রতি অনুকম্পা পরায়ণ, ধর্মরহস্য সম্বন্ধে অভিজ্ঞ, ইন্দ্রিয়জয়ী ও পবিত্র ছিলেন।"
কুলোচিতমতিঃ ক্ষাত্রং স্বধর্মং বহু মন্যতে।
মন্যতে পরয়া প্রীত্যা মহৎ স্বর্গফলং ততঃ৷৷
"স্বীয় বংশানুরূপ বুদ্ধিসম্পন্ন রাম নিজের ক্ষাত্রধর্মকে অত্যন্ত সম্মান করতেন। মনে করতেন, তার থেকেই সা অর্থাৎ স্বধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই পরমানন্দে মহৎ স্বর্গফল প্রাপ্তি হবে।
নাশ্রেয়সি রতো যশ্চ ন বিরুদ্ধকথারুচিঃ।
উত্তরোত্তরযুক্তীনাং বক্তা বাচস্পতির্যথা৷৷
"শ্রীরামচন্দ্র অকল্যাণকর কর্মে রত হতেন না, শাস্ত্র বিরুদ্ধ কথায় তাঁর প্রবৃত্তি হত না। বৃহস্পতির মতো তিনি পরপর যুক্তি সাজিয়ে কথা বলতেন।
অরোগস্তরুণো বাগ্মী বপুষ্মান্ দেশকালবিৎ।
লোকে পুরুষসারজ্ঞঃ সাধুরেকো বিনির্মিতঃ৷৷
" নীরোগ, আকর্ষণীয় দেহসৌষ্ঠববিশিষ্ট তরুণ,
সুবক্তা এবং স্থান-কাল বিবেচনাপূর্বক কর্মক্ষম শ্রীরামচন্দ্রই যেন জগতে মানব চরিত্রের সারতত্ত্ববেত্তা একমাত্র ব্যক্তিরূপে সৃষ্ট হয়েছেন।"
স তু শ্রেষ্ঠের্গুণৈযুক্তঃ প্রজানাং পার্থিবাত্মজঃ।
বহিশ্চর ইব প্রাণো বভূব গুণতঃ প্রিয়ঃ ।।
তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ গুণরাজি দ্বারা মণ্ডিত। স্বীয়
সদ্গুণহেতু তিনি ছিলেন প্রজাদের নিকট বাহিরে বিচরণশীল প্রাণবায়ুর মতো প্রিয়।
সর্ববিদ্যাব্রতস্নাতো যথাবৎ সাঙ্গবেদবিৎ।
ইষ্বস্ত্রে চ পিতুঃ শ্রেষ্ঠো বভূব ভরতাগ্রজঃ।।
ভরতাগ্রজ রামচন্দ্র সকল বিদ্যারূপ ব্রত সমাপনান্তে নিষ্ণাত (পারঙ্গম)। শিক্ষা, কল্প, নিরুক্ত, জ্যোতিষ, ছন্দ এবং ব্যাকরণ -এ ষড়ঙ্গ সহ বেদবিদ্যায় (ঋক্, সাম, যজু, অথর্ব) অভিজ্ঞ এবং ধনুর্বিদ্যায় পিতা দশরথ অপেক্ষা দক্ষ।
কল্যাণাভিজনঃ সাধুরদীনঃ সত্যবাগৃজুঃ।
বৃদ্ধৈরভিবিনীতশ্চ দ্বিজৈর্ধর্মার্থদর্শিভিঃ৷৷
"শ্রীরামচন্দ্র ছিলেন কল্যাণের আকর, সৎস্বভাব, দীনতারহিত (উন্নতশীর) সত্যবাদী, সরল স্বভাবের এবং ধর্মশাস্ত্রে ও অর্থশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ব্রাহ্মণগণ কর্তৃক সুশিক্ষিত।
ধর্মকামার্থতত্ত্বজ্ঞঃ স্মৃতিমান্ প্রতিভানবান্।
লৌকিকে সময়াচারে কৃতকল্পো বিশারদঃ ৷৷
"ধর্মার্থকামশাস্ত্রে সুপণ্ডিত, স্মৃতিধর, প্রত্যুৎপন্নমতি ও লৌকিক ব্যবহারে যথোচিত অভিজ্ঞ।"
নিভৃতঃ সংবৃতাকারো গুপ্তমন্ত্রঃ সহায়বান্।
অমোঘক্রোধহৰ্ষশ্চ ত্যাগসংযমকালবিৎ।।
"সময়বিশেষে তিনি নির্জনে নিভৃতে থাকতেন, রাজ্যশাসনের মন্ত্রগুপ্তি রক্ষা করতেন। তাঁর গুণগ্রাহী সাহায্যকারী বন্ধুর অভাব ছিল না। সময় বিশেষে তাঁর ক্রোধ এবং হর্ষ (আনন্দ) অব্যর্থ হত ; ত্যাগ ও সংযমের সময়জ্ঞান তাঁর অমোঘ ছিল।
দৃঢ়ভক্তিঃ স্থিরপ্রজ্ঞো নাসগ্রাহীন দুর্বচঃ।
নিস্তন্দ্রীরপ্রমত্তশ্চ স্বদোষপরদোষবিৎ৷৷
"শ্রীরামচন্দ্র ছিলেন গুরুজনে প্রগাঢ় ভক্তিপরায়ণ এবং প্রজ্ঞাবান (সুখে-দুঃখে সমবোধসম্পন্ন)। তিনি অসৎপথে আহৃত বা অসৎব্যক্তি প্রদত্ত বস্তু গ্রহণ করতেন না ; কখনই কারও প্রতি দুর্বাক্য ব্যবহার করতেন না। তিনি ছিলেন অনলস ও প্রমাদহীন এবং নিজদোষ ও পরদোষ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অবহিত।"
শাস্ত্রজ্ঞশ্চ কৃতজ্ঞশ্চ পুরুষান্তরকোবিদঃ।
যঃ প্রগহানুগ্রহয়োর্যথান্যায়ং বিচক্ষণঃ৷৷
রামচন্দ্র ছিলেন শাস্ত্রজ্ঞানী, উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ এই এবং সকল মানুষের মনের ভাব বুঝতে সমর্থ। শাস্তি ও আনুকূল্য দানে অভিজ্ঞ ন্যায় বিচারক।
সৎসংগ্রহানুগ্রহণে স্থানবিন্নিগ্রহস্য চ।
আয়কর্মণ্যুপাযজ্ঞঃ সংদৃষ্টব্যয়কর্মবিৎ৷৷
"অনুসন্ধান করে সজ্জনদের প্রতি যথাযোগ্য অনুগ্রহ (সম্মান) প্রদর্শন এবং (দুর্জনদের) নিগ্রহকরণের যথোপযুক্ত জ্ঞান তাঁর ছিল।সৎপথে অর্থের আয় এবং যথাযথ ব্যয়ের উপায়ও তাঁর জানা ছিল।
শ্রৈষ্ঠাং চাস্ত্রসমূহেষু প্রাপ্তো ব্যামিশ্রকেষু চ
অর্থধর্মৌ চ সংগৃহ্য সুখতন্ত্রো ন চালসঃ ॥
তিনি নানাবিধ অস্ত্রচালনায় ও (সংস্কৃত-প্রাকৃতাদি) মিশ্রভাষায় নাট্যপরিচালনায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিলেন এবং সদ অর্থসংগ্রহ করে নিরলসভাবে ধর্মপথে সুখভোগ করতেন।
বৈহারিকাণাং শিল্পানাং বিজ্ঞাতার্থবিভাগবিৎ।
আরোহে বিনয়ে চৈব যুক্তো বারণবাজিনাম্॥
"রামচন্দ্র প্রমোদ সম্বন্ধীয় শিল্পকলা বিদ্যাসমূহে এবং প্রাপ্ত ধনের সুষ্ঠু বিভাগ করণে (বন্টনে) অভিজ্ঞ ছিলেন, বহু আবার হস্তী ও অশ্বের শিক্ষাদানান্তে তাদের উপর আরোহণেও দক্ষ ছিলেন।"
ধনুর্বেদবিদাং শ্রেষ্ঠো লোকেঽতিরথসম্মতঃ।
অভিযাতা প্রহর্তা চ সেনানয়বিশারদঃ৷৷
"তিনি ছিলেন সর্বসম্মত শ্রেষ্ঠ ধনুর্বেদবিদ এবং অসংখ্য শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে পারদর্শী, সৈন্য পরিচালনায় দক্ষ এবং শত্রুসৈন্যকে আক্রমণপূর্বক কঠিন আঘাত হানতে সমর্থ।"
অপ্রধৃষ্যশ্চ সংগ্রামো ক্রুদ্ধৈরপি সুরাসুরৈঃ।
অনসূয়ো জিতক্রোধো ন দৃপ্তো ন চ মৎসরী।।
যুদ্ধে ক্রুদ্ধ দেবতা ও দানবদের কাছে তিনি ছিলেন অপরাজেয় ; অথচ, তিনি ছিলেন দ্বেষশূন্য (অহিংসক), ক্রোধজয়ী, নিরহঙ্কার এবং মাৎসর্যরহিত (পরশ্রীকাতরতাশূন্য)।
নাবজ্ঞেয়শ্চ ভূতানাং কালবশানুগঃ।
এবং শ্রেষ্ঠৈর্গুণৈযুক্তঃ প্ৰজানাং পার্থিবাত্মজঃ ৷৷
সম্মতস্ত্ৰিষু লোকেষু বসুধায়াঃ ক্ষমাগুণৈঃ।
বুদ্ধ্যা বৃহস্পপেতস্তুল্পো বীর্যে চাপি শচীপতেঃ৷৷
"রাজপুত্র রাম কারও কাছেই অবজ্ঞার (অনাদরের) পাত্র ছিলেন না, কালের বশীভূত ছিলেন না (সময়ের পরিবর্তনে স্বরূপ ও স্বভাবের পরিবর্তন করতেন না) ।এইরকম শ্রেষ্ঠ গুণসমূহে যুক্ত শ্রীরাম প্রজাদের এবং ত্রিভুবনের সকলের আদরণীয় ছিলেন। তিনি ক্ষমাগুণে পৃথিবীর, বুদ্ধিতে দেবগুরু বৃহস্পতির এবং পরাক্রমে দেবরাজ শচীপতি ইন্দ্রের তুল্য ছিলেন।"
তথা সর্বপ্রজাকান্তৈঃ প্রীতিসঞ্জননৈঃ পিতুঃ।
গুণৈর্বিরুরুচে রামো দীপ্তঃ সূর্য ইবাংশুভিঃ।।
"প্রজাসকলের মনোরঞ্জন ও পিতার প্রীতিকর কার্যগুণে রাম, স্বীয় কিরণমালায় প্রোজ্জ্বল সূর্যের মতো প্রদীপ্ত (সকলের আকর্ষণীয়) হয়ে উঠেছিলেন।
তমেবংবৃত্তসম্পন্নমপ্রদৃশ্যপরাক্রম্।
লোকনাথোপমং নাথমকাময়ত মেদিনী।।
"এইরকম অজেয় পরাক্রমী সদাচারসম্পন্ন লোকপাল সন এবং সদৃশ সেই রামকে পৃথিবী তথা পৃথিবীর সকল প্রজা করতেন। প্রভুরূপে কামনা করতেন।"
(রামায়ণ: অযোধ্যাকাণ্ড, ১.৯-৩৪)
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।