ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

মোসাহেবি, তেলবাজি করে; সম্প্রদায়ের ক্ষতি করতে নেই।

মোসাহেবি, তেলবাজি করে;  সম্প্রদায়ের ক্ষতি করতে নেই বিভিন্ন নামে সমাজে তেল দিতে এবং নিতে সকল মানুষে বা অধিকাংশ মানুষই পছন্দ করে। সমাজে বুদ্ধিদীপ্ত তেলবাজির চর্চা এত বেশি হয় যে, বিষয়টি বর্তমানে শিল্পের পর্যায়ে উন্নিত হয়েছে। যা প্রয়োজনে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। তেলের দ্বারা সকল অসাধ্য কর্মই সাধন করা যায়। সকল মানুষই আত্মপ্রশংসা শুনতে ভালোবাসে। শুধু কম আর বেশি। কারো আত্মপ্রশংসার বিষয়টি কম, ছদ্মবেশী বিনয় দিয়ে ঢাকা। মানুষ হুট করে সেই সেই ছদ্মবেশী বিনয়ের অভিনয় ধরতে পারে না। আবার কারো হয়ত আত্মপ্রশংসার মাত্রা বাড়তে বাড়তে দৃষ্টিকটুর পর্যায়ে চলে গেছে। দুইএক কথাতেই মানুষ বিষয়টি বুঝতে পারে। তেল যে একেবারে ক্ষতিকর একটি বিষয়, তা কিন্তু নয়। তেলের ভালো-মন্দ বিবিধ উপকারীরা আছে। শুধু পরিমিত এবং প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করতে হয়।তেল ছাড়া রান্না হয় না, তেল ব্যবহার করতেই হয়।রান্নায় অতিরিক্ত তেলের ব্যবহারে শরীরের যেমন ক্ষতি হয়, পরিমিতভাবে ব্যবহার করতে হয়।তেলের অত্যন্ত প্রয়োজন আছে, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহার ভালো নয়। নিত্যদিনের তেলের পরিমিত ব্যবহারের মত, অতিরিক্ত কাউকে তৈলমর্দন করা অনুচিত। কোন ব্যক্তির অতিরিক্ত আত্মপ্রশংসাও ক্ষতিকর। তেল যদি জগতে না থাকতো, তবে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যেত; গাড়ীগুলো চলতে পারতো না; মানুষকে তেলবিহীন শুধু জলে সিদ্ধ করে খাবার খেতে হতো। তেলের অভাবে এমন বহু অনর্থ ঘটতো। তাই তৈল এবং তৈলমর্দনকারীর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর 'তৈল' নামে একটি সুবিখ্যাত প্রবন্ধ রয়েছে। সেই প্রবন্ধে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৈলের ক্ষমতা সম্পর্কে বলেন:  "বাস্তবিকই তৈল সর্বশক্তিমান; যাহা বলের অসাধ্য, যাহা বিদ্যার অসাধ্য , যাহা ধনের অসাধ্য, যাহা কৌশলের অসাধ্য,তাহা কেবল একমাত্র তৈল দ্ধারা সিদ্ধ হইতে পারে। যে সর্বশক্তিময় তৈল ব্যবহার করিতে জানে,সে সর্বশক্তিমান। তাহার কাছে জগতের সকল কাজই সোজা। তাহার চাকরির জন্য ভাবিতে হয় না — উকীলিতে পসার করিবার জন্য সময় নষ্ট করিতে হয় না , বিনা কাজে বসিয়া থাকিতে হয় না, কোন কাজেই শিক্ষানবিশ থাকিতে হয় না।যে তৈল দিতে পারিবে,তাহার বিদ্যা না থাকিলেও সে প্রফেসার হইতে পারে। আহাম্মুক হইলেও ম্যাজিষ্ট্রেট হইতে পারে, সাহস না থাকিলেও সেনাপতি হইতে পারে এবং দুর্লভরাম হইয়াও উড়িষ্যার গভর্ণর হইতে পারে। ...শেষে মনে রাখা উচিত ,এক তৈলে চাকাও ঘোরে আর তৈলে মনও ফেরে।" তৈলমর্দন করে ক্ষমতাবানদের পা ধরে উপরে উঠতে গিয়ে অনেক সময় ক্ষমতাবানকেই তার সুবিধাভোগী অনুসারীরা ক্ষমতাচ্যুত করে ফেলে। অনুসারীদের কারণে ক্ষমতাসীনের বিপদ চলে আসে, ক্ষমতার গদি-বালিশ চলে যায়। স্বার্থান্বেষী অনুসারীরা নেতার পা ধরে ঝুলে থাকতে গিয়ে, অনেক সময়ে নেতাকে সাথে নিয়েই গভীর খাদে চিৎপটাং হয়ে যায়। সেখান থেকে আর উত্তরণের উপায় থাকে না।পরে ক্ষমতার আম ছালা দুটো সহ সকলই চলে যায়; পরিণাম হয় শূণ্য। তৈলমর্দনের যাদুকরী প্রভাবে তৈলমর্দনকারী সমাজে সাময়িক প্রভাবশালী হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সেই প্রভাব কখনই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী  সহকারী অধ্যাপক,  সংস্কৃত বিভাগ,  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


বিভিন্ন নামে সমাজে তেল দিতে এবং নিতে সকল মানুষে বা অধিকাংশ মানুষই পছন্দ করে। সমাজে বুদ্ধিদীপ্ত তেলবাজির চর্চা এত বেশি হয় যে, বিষয়টি বর্তমানে শিল্পের পর্যায়ে উন্নিত হয়েছে। যা প্রয়োজনে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। তেলের দ্বারা সকল অসাধ্য কর্মই সাধন করা যায়। সকল মানুষই আত্মপ্রশংসা শুনতে ভালোবাসে। শুধু কম আর বেশি। কারো আত্মপ্রশংসার বিষয়টি কম, ছদ্মবেশী বিনয় দিয়ে ঢাকা। মানুষ হুট করে সেই সেই ছদ্মবেশী বিনয়ের অভিনয় ধরতে পারে না। আবার কারো হয়ত আত্মপ্রশংসার মাত্রা বাড়তে বাড়তে দৃষ্টিকটুর পর্যায়ে চলে গেছে। দুইএক কথাতেই মানুষ বিষয়টি বুঝতে পারে। তেল যে একেবারে ক্ষতিকর একটি বিষয়, তা কিন্তু নয়। তেলের ভালো-মন্দ বিবিধ উপকারীরা আছে। শুধু পরিমিত এবং প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করতে হয়।তেল ছাড়া রান্না হয় না, তেল ব্যবহার করতেই হয়।রান্নায় অতিরিক্ত তেলের ব্যবহারে শরীরের যেমন ক্ষতি হয়, পরিমিতভাবে ব্যবহার করতে হয়।তেলের অত্যন্ত প্রয়োজন আছে, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহার ভালো নয়। নিত্যদিনের তেলের পরিমিত ব্যবহারের মত, অতিরিক্ত কাউকে তৈলমর্দন করা অনুচিত। কোন ব্যক্তির অতিরিক্ত আত্মপ্রশংসাও ক্ষতিকর। তেল যদি জগতে না থাকতো, তবে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যেত; গাড়ীগুলো চলতে পারতো না; মানুষকে তেলবিহীন শুধু জলে সিদ্ধ করে খাবার খেতে হতো। তেলের অভাবে এমন বহু অনর্থ ঘটতো। তাই তৈল এবং তৈলমর্দনকারীর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর 'তৈল' নামে একটি সুবিখ্যাত প্রবন্ধ রয়েছে। সেই প্রবন্ধে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৈলের ক্ষমতা সম্পর্কে বলেন:

"বাস্তবিকই তৈল সর্বশক্তিমান; যাহা বলের অসাধ্য, যাহা বিদ্যার অসাধ্য , যাহা ধনের অসাধ্য, যাহা কৌশলের অসাধ্য,তাহা কেবল একমাত্র তৈল দ্ধারা সিদ্ধ হইতে পারে।
যে সর্বশক্তিময় তৈল ব্যবহার করিতে জানে,সে সর্বশক্তিমান। তাহার কাছে জগতের সকল কাজই সোজা। তাহার চাকরির জন্য ভাবিতে হয় না — উকীলিতে পসার করিবার জন্য সময় নষ্ট করিতে হয় না , বিনা কাজে বসিয়া থাকিতে হয় না, কোন কাজেই শিক্ষানবিশ থাকিতে হয় না।যে তৈল দিতে পারিবে,তাহার বিদ্যা না থাকিলেও সে প্রফেসার হইতে পারে। আহাম্মুক হইলেও ম্যাজিষ্ট্রেট হইতে পারে, সাহস না থাকিলেও সেনাপতি হইতে পারে এবং দুর্লভরাম হইয়াও উড়িষ্যার গভর্ণর হইতে পারে।
...শেষে মনে রাখা উচিত ,এক তৈলে চাকাও ঘোরে আর তৈলে মনও ফেরে।"
তৈলমর্দন করে ক্ষমতাবানদের পা ধরে উপরে উঠতে গিয়ে অনেক সময় ক্ষমতাবানকেই তার সুবিধাভোগী অনুসারীরা ক্ষমতাচ্যুত করে ফেলে। অনুসারীদের কারণে ক্ষমতাসীনের বিপদ চলে আসে, ক্ষমতার গদি-বালিশ চলে যায়। স্বার্থান্বেষী অনুসারীরা নেতার পা ধরে ঝুলে থাকতে গিয়ে, অনেক সময়ে নেতাকে সাথে নিয়েই গভীর খাদে চিৎপটাং হয়ে যায়। সেখান থেকে আর উত্তরণের উপায় থাকে না।পরে ক্ষমতার আম ছালা দুটো সহ সকলই চলে যায়; পরিণাম হয় শূণ্য। তৈলমর্দনের যাদুকরী প্রভাবে তৈলমর্দনকারী সমাজে সাময়িক প্রভাবশালী হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সেই প্রভাব কখনই দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
((এই তেলবাজদের নিয়ে আপনাদের যারাযার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানাতে পারেন। post : Facebook ))
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁